Sunday, 22 November 2015

সোনা মাটির ধান (লোক কবিতা)




ও মাটির ধান রে সোনা মাটির ধান।
ও সোনার ধান রে মাটির সোনা ধান।

চাষী গেছে মাঠে রে সে গায় মাটির গান।
ও মাটির ধান রে ও সোনার ধান।

অঘ্রানেতে ধানের খেতে
সোনার ধান উঠে মেতে
আনন্দেতে সবাই মাতে, উথাল পাথাল পরান।

ও মাটির ধান রে সোনা মাটির ধান।
ও সোনার ধান রে মাটির সোনা ধান।
চাষী গেছে মাঠে রে ও গায় মাটির গান।

সোনা ধান মাঠে মাঠে
চাষীরা সব ধান কাটে,
বেলা গেলে ঘরে ফেরে, দিন হলে অবসান।

ও মাটির ধান রে সোনা মাটির ধান।
ও সোনার ধান রে মাটির সোনা ধান।
চাষী গেছে মাঠে রে সে গায় মাটির গান।

উঠোন মাঝে ধানের গোলা,
ধান রেখেছে চাষী ভোলা।
ধানের বোঝা মাথায় নিয়ে, আসে সব কিষান।

ও মাটির ধান রে সোনা মাটির ধান।
ও সোনার ধান রে মাটির সোনা ধান।
চাষী গেছে মাঠে রে সে গায় মাটির গান।




Friday, 13 November 2015

দুটুকরো কবিতা

খবরের কাগজের
প্রথম পাতায়
লাল কালিতে লেখা
কবিতার মৃত্যু
দুঃসংবাদ!
দ্রুতগতিতে পৌঁছায়
এলো ওরা হাতে
রক্তাক্ত শানিত
রবারি লয়ে,
বর্বরোচিত ভাবে
হত্যা করলো একটা
নিষ্পাপ মেয়েটাকে
একটি ফুলের মৃত্যু
ভালবাসার মৃত্যু
...
কবিতা আজ আর নেই
সে মরে গেছে,
সে হারিয়ে গেছে,
সে ফুরিয়ে গেছে
কিন্তু মরে নি সে,
ভালবাসার মৃত্যু নেই
সে আজও বেঁচে আছে
আজ কবিতার পাতায়
দুটুকরো কবিতা হয়ে


সময় কথা বলে,
কান্না, ঘাম আর
রক্তের ফসলে
জমে ওঠে
মৃত কংকাল
ওরা অভিশাপ দেয়
শ্মশানে ফুলের গাছটা
শুকিয়ে গেছে
তবে কি কবিতা মরে গেছে?

দুটুকরো কবিতার
শেষ কথা
ভালবাসার অপমৃত্যু!
কবিতার মৃত্যু

একটি ফুলের মৃত্যু


Friday, 18 September 2015

     শরতের কবিতা-5

শরতের প্রভাতে সোনা ঝরা রোদ্দুর
উঁকি দেয় নীল আকাশের আঙিনায়
শিউলির ডালে কলি ফুটিল সকলি
নদীর ধারে কাশফুল সুগন্ধ ছড়ায়

কচি কচি ধানগাছে ভরা খেত মাঠ,
যেদিকে তাকাই দেখি সবুজ চারিদিক
ঘাসের আগায় পড়ে নিশির শিশির,
সূর্যের আলোয় তারা করি ঝিকিমিক

শাল পিয়ালের বনে, দূরে মাদল বাজে
অরন্যের ঘুম ভাঙে পূজোর খুশিতে
ঢাকীরা সব বাজায় ঢাক, কাঁসর বাজায়,
সবার চিত্ত আজি আনন্দে উঠে মেতে

মেঠো পথে গাঁয়ের বাউল চলে গান গেয়ে
একতারাতে বাউলগানের তোলে মিঠে সুর
নয়ন দিঘির কালে জলে শালুক পদ্ম ফোটে,
সেই দিঘির জলে খেলা করে সোনালী রোদ্দুর

রোজ বিকেলে পাড়ার ছেলে খেলে হা ডু ডু,
খেলার মাঠে চু কিত্ কিত্ কানামাছি খেলা
ঢাকের শব্দে জেগে ওঠে গাঁয়ের বামুনপাড়া,
মন্দিরেতে ঘণ্টা বাজে, প্রতি সন্ধ্যে বেলা

বাঁশবাগানে বাঁশগাছের মাথার উপর দিয়ে
আকাশে চাঁদ ওঠে, জোছনা পড়ে ঝরে
শারদ প্রাতে শুনি প্রভাত পাখির গান

শরতের আগমনে খুশিতে চিত্ত ওঠে ভরে


Friday, 28 August 2015

    শরতের কবিতা-2


বৃষ্টি বাদল সবই গেছে থেমে,
আকাশখানি সাদা মেঘে ঢাকা
নদীর চরে নৌকা আছে বাঁধা,
খেয়াঘাটে মাঝির নাইকো দেখা

সাদা কাশ ফুলের বনে বনে,
শালিক পাখি বেড়ায় উড়ে উড়ে
বাতাসে বাতাসে পূজোর গন্ধ ভাসে,
খুশির আনন্দে চিত্ত ওঠে ভরে

ধানের খেতে সবুজের সমারোহ
খেতের আলে ছাগল ভেড়া চরে
গাঁয়ের ছেলে ডোবাতে ছিপ ফেলে,
বঁড়শি দিয়ে চ্যাং গড়ুই  ধরে।।

ভর দুপুরে কলসী কাঁখে নিয়ে,
গাঁয়ের বধূরা চান করতে যায়
গাছের ডালে বসে রাখাল ছেলে,
বাঁশের বাঁশি মিঠে সুরে বাজায়

দিনের শেষে পড়ে আসে বেলা,
দিগন্তে লাল সূর্য ডুবে যায়
পাখিরা সব কিচির মিচির করে,
দিনের শেষে ফেরে আপন বাসায়

ঢাকের শব্দে মেতে ওঠে গ্রাম,
কাঁসর ঘণ্টা বাজে মন্দির মাঝে
ধূপ দীপ জ্বলে সবার ঘরে ঘরে,

খুশির আনন্দে সাঁঝের সানাই বাজে
     শরতের কবিতা

ভোরের আলোয় ভরেছে আকাশ,
প্রভাতসূর্য গগনে ওঠে
নয়নদিঘির কালো ঘোলা জলে
শালুক ও পদ্ম ফোটে

শরতের সোনালী রোদ হাসে
বাড়ির ছাদ বারান্দায়
বাড়ির উঠোন সবুজ ঘাসে ভরা,
গঙ্গা ফড়িং উড়ে বেড়ায়

ধানের খেতে মিঠে হাওয়ায়,
পূজোর গন্ধ ভাসে
রাঙা মেঘে সাঁতার দিয়ে,
ধবল বলাকা আসে

ফকির ডাঙায় বনটিয়া এসে
শুঁয়োপোকা ধরে
কূলবধু জল আনিতে গেলে
লাজে যায় মরে

সন্ধ্যেবেলায় বিহগের দল
ফেরে আপন বাসায়
গাঁয়ের বধূ প্রতি সন্ধ্যায়

তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালায়